,

জবর দখল সন্ত্রাস রাহাজানিতে উত্তপ্ত বাহুবলের হরিতলা গ্রাম 

স্টাফ রিপোর্টার : বাহুবল উপজেলার নিভৃত পল্লী পূর্ব রসুলপুর প্রকাশিত হরিতলা ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ওই গ্রামের একটি চিহ্নিত প্রভাবশালী চক্রের জবর দখল, সন্রাস রাহাজানিতে এখানে বিরাজ করছে অশান্তির দাবানল। পঞ্চায়েতি আধিপত্যের মাধ্যমে উচ্ছৃঙ্খল ওই চক্রটির কারণে জিম্মি হয়ে পড়েছেন গ্রামের সাধারণ মানুষ।  সর্বশেষ তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে প্রভাবশালী বাহিনীর লোকজন গ্রামের নিরীহ এক যুবককে  প্রকাশ্যে রাস্তায় হামলা চালিয়ে  কুপিয়ে রক্তাক্তের মাধ্যমে  ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছে। গত (৭ মে) সন্ধ্যায় সংঘটিত এ হামলার ঘটনায় বাহুবল মডেল থানায় মামলা দায়েরের পর নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে আসামীরা। সরজমিনে জানা যায়, হরিতলা গ্রামের উস্তার মিয়া সহ কয়েক ব্যক্তি পেশী শক্তির মাধ্যমে জিম্মি করে রেখেছেন গ্রামের নিরীহ লোকজনকে। জানা যায়, মাসেক আগে গরুর ধান খাওয়ার ঘটনা নিয়ে ওই গ্রামের মৃত মফিজ উল্লা মহালদারের ছেলে উস্তার গংদের সাথে বিরোধ বাধে একই গ্রামের মৃত রশিদ উল্লার ছেলে আব্দুল মতলিবের। তখন বিষয়টি নিরসনের জন্য স্থানীয় মুরুব্বিয়ান উদ্যোগ নেন। কিন্তু উস্তার মিয়ার পক্ষের অসহযোগিতার কারণে সালিশ হয়নি।
এক পর্যায়ে গত ৭ মে সন্ধায় স্থানীয় হরিতলা বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে আব্দুল মতলিবের ছেলে সবুজ মিয়া (২৪) এর উপর হামলা চালায় উস্তার মিয়া,অনু মিয়া ও ফুল মিয়াসহ ২০/২২ জন লোক। এসময় সবুজ মিয়ার শোর চিৎকার শুনে তাকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে তার বৃদ্ধা ফুফু ফুল বানু (৬০) কেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে হামলাকারীরা। এমনকি এঘটনার প্রতিবাদ করায় সাবাজ মিয়া নামের অপর এক ব্যক্তির দোকানেও হামলা চালায় উস্তার মিয়ার লোকজন। এসময় ওই দোকানে ভাংচুর ও  লুটপাট চালিয়ে অর্ধ লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যায় হামলাকারীরা। স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত সবুজ মিয়া ও তার ফুফুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
পরে সবুজ মিয়ার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এখনো সবুজ মিয়া সেখানে চিকিৎসাধীন আছে।  অপরদিকে এঘটনায় সবুজ মিয়ার পিতা বাদি হয়ে মৃত মফিজ উল্লার ছেলে উস্তার মিয়াকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের বিরুদ্ধে  গত (১০ মে) বাহুবল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। ওইদিনই মামলাটি থানায় রেকর্ডভুক্ত হয়। বাদির অভিযোগ মামলাটি তুলে নেয়ার জন্য আসামীরা নানাভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি দিচ্ছে। আর তাদেরকে উস্কে দিচ্ছেন আসামীদের নিকটাত্মীয় সুনামগঞ্জে কর্মরত ফিরোজ মিয়া নামের এক দারোগা। এছাড়া এ মামলাটি ভিন্নধারায় নিতে আসামি অনু মিয়াসহ তার সহযোগীরা নিজেদের ঘর দরজা ভেঙ্গে বা মহিলাকে নির্যাতন করে সাজানো মামলা দায়েরের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।  এরই অংশ হিসাবে গত (১৪ মে) দুপুরে প্রকাশ্যে নিজের ঘরের টিনের চাপটা বাইড়িয়ে খুলে ফেলার চেষ্টা করেন অনু মিয়া এবং তার পক্ষের আমিন,সোহেল,মাসুক, মমিন আলী ও নজরুল।  এ ঘটনাটি আশেপাশের নিরপেক্ষ লোকজন প্রত্যক্ষ করেছেন। সরেজমিনে গেলে এ প্রতিনিধির কাছে লোকজন প্রকৃত ঘটনা এভাবেই তুলে ধরেন। তারা জানান, এঘটনা নতুন নয়। দীর্ঘ দিন ধরে উল্লেখিত উস্তার মিয়ার লোকজন গ্রামে ত্রাসের রাজত্ব করে চলেছে। তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা থাকলেও তারা কোন তোয়াক্কাই করছে না। দিন দিন তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বর্তমানে আসামী পক্ষের হুমকির কারণে প্রতিপক্ষের জমির পাকা ধান ও মৌসুমি ফসল যথাসময়ে তুলতে না পারায় তা বিনষ্ট হচ্ছে।
এ ব্যাপারে প্রশাসনের জোড়ালো হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগীরা।


     এই বিভাগের আরো খবর